হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জে স্কুলছাত্র জনি দাশ (১৭) হত্যা মামলার আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণে মারধর ও পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই মামলা করে আদালত পুলিশ। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দীন। তিনি বলেন, আসামি সাজু মিয়াকে (২২) ছিনিয়ে নিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঘটনায় এই মামলা হয়। অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জনি দাস হবিগঞ্জ শহরের ডাকঘর এলাকার নর্ধন দাশের ছেলে ও দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ৩ জুলাই ভোরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। হবিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জনিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। ওই মামলায় সোমবার সাজু মিয়া নামের এক তরুণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমবাক গ্রামে। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজু হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
ওই মামলায় বুধবার দুপুরে সাজুর পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় একদল শিক্ষার্থী সাজুর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে হামলাকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। পাশাপাশি একদল আইনজীবী ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রাতেই মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি সাজু মিয়ার ফাঁসি দাবি করে ৪০-৫০ জনের একটি দল আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় আদালত পুলিশ উপস্থিত আইনজীবীদের সহায়তায় উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সরিয়ে দিয়ে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাঁদের সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম বাধাপ্রাপ্ত হয়। আসামির রিমান্ড শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে সাজুকে আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় হামলাকারীরা আবার সাজুকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি মারধর করে। এ সময় আসামিকে নিয়ে এজলাস কক্ষে ঢুকলে আদালতের দরজায় ধাক্কা দেয় হামলাকারীরা। এতে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। পরে পুলিশ, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীদের যৌথ প্রচেষ্টায় সাজু মিয়াকে রক্ষা করা হয়।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দীন শাহীন বলেন, ওই ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply